প্রকাশিত: ২৩/০২/২০১৭ ৯:৩২ এএম

নিউজ ডেস্ক::
উপজেলা ভূমি (এসিল্যান্ড) অফিসের দুর্নীতি কমাতে ৫১টি নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এসব নির্দেশনায় ভূমির নামজারি, জমাভাগ ও একই প্রকৃতির অন্যান্য মামলা দ্রুত ও নির্ভুলভাবে নিষ্পত্তির কথা বলা হয়েছে। গত ৯ই ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে উপজেলা ভূমি অফিসের নামজারি সেবা সংক্রান্ত নির্দেশনা দেশের সব বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর কাছে পাঠানো হয়েছে। ভূমির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে এসিল্যান্ড অফিসের জঞ্জাল অনেকাংশে দূর হবে। ভূমি সংক্রান্ত কাজে দুর্নীতি কিছুটা হলেও কমবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় মাঠ পর্যায়ের দপ্তরগুলোর মধ্যে উপজেলা ভূমি অফিসের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। ভূমি অফিসের বিভিন্ন কাজে দপ্তর প্রধান হিসেবে সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর সাফল্য নির্ভর করে। নামজারি উপজেলা ভূমি অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম। কিন্তু দেখা গেছে, কোনো কোনো উপজেলা ভূমি অফিস থেকে এসব বিষয়ে ঠিকভাবে সেবা দেয়া হচ্ছে না। তাই নামজারি জমাভাগ ও একই প্রকৃতির অন্যান্য মামলা দ্রুত ও নির্ভূলভাবে নিষ্পত্তি করতে ৫১টি বিষয় খেয়াল রাখার জন্য বলা হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়, নামজারি ও জমাভাগ সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তির জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় ও ভূমি সংস্কার বোর্ডের জারি করা সব নির্দেশনা ঠিকভাবে অনুসরণ করতে হবে। এছাড়া, এসিল্যান্ড অফিসে জমা দিতে হবে এমন ফি’র পরিমাণ উল্লেখ করে নাগরিক সনদ তৈরি ও দৃশ্যমান স্থানে স্থাপন করতে হবে। পাশাপাশি সেবাপ্রদানকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছবি, ফোন নম্বর, নাগরিক সনদে উল্লেখ করতে হবে। স্টাফদের জন্য আইডি কার্ড ও ফ্রন্ট ডেস্কে সার্বক্ষণিক একজনকে দায়িত্ব দিতে হবে। নামজারির সরকারি ফি জনগণের কাছে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা নিতে হবে। এতে বলা হয়, নামজারির আবেদন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। নামজারি মামলা নম্বর, বিষয় ও পরবর্তী তারিখ উল্লেখ করে আবেদনকারীকে একটি রসিদ দিতে হবে। কোনো অবস্থাতেই ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা নামজারির আবেদন যাতে গ্রহণ না করে ওই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। উপজেলা ভূমি অফিসের প্রত্যেক কর্মচারীর দায়িত্ব সুনির্দিষ্টভাবে বণ্টন করে দিতে হবে। তবে নামজারির আবেদন বেশি হলে অধিক্ষেত্র উল্লেখ করে একাধিক কর্মচারীকে লিখিতভাবে দায়িত্ব দিতে হবে। আবেদন দাখিল অনুযায়ী ধারাবাহিকভাবে মামলার ক্রমিক নম্বর দিতে হবে। মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রেও ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে। তবে, জনস্বার্থ/বিশেষ জরুরি প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে নিয়ে মামলার সংক্ষিপ্ত তারিখ নির্ধারণ করা যায়। কম্পিউটার কম্পোজ করে মামলার প্রতিটি পদক্ষেপের প্রথম অনুচ্ছেদে আদেশের ক্রমিক নম্বর, মামলার তারিখ, বিষয়বস্তু ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট নামজারি সহকারী সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করবেন। একই তারিখে দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে এসিল্যান্ড হাতে লেখা বা কম্পোজের মাধ্যমে আদেশ দেবেন। এতে স্বাক্ষর ও সিল থাকতে হবে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কানুনগো/সার্ভেয়ার/ইউনিয়ন ভূমি সহকারী/উপ- সহকারী কর্মকর্তাকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে হবে। নির্দিষ্ট তারিখে প্রতিবেদন দেয়া সম্ভব না হলে সময় বাড়ানোর আবেদন করতে হবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে জারিকারকের গন্তব্য স্থানে না পৌঁছে প্রাপককে পাওয়া গেল না মর্মে প্রতিবেদন দেন। এই বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। দৈবচয়ন পদ্ধতিতে ওই প্রতিবেদন জারির সত্যতা যাচাই করতে হবে। এতে বলা হয়, সিদ্ধান্ত নেয়ার সুবিধার জন্য মূল দলিল দেখা ও প্রাসঙ্গিক তথ্য পরীক্ষা করতে হবে। প্রতিদিন একটি নির্ধারিত সময়ে শুনানি নিতে হবে। তবে যৌক্তিক কারণে নির্ধারিত সময়ে বা তারিখে দাপ্তরিক কার্যক্রম সম্পন্ন করা না গেলে আগের দিন নোটিশ বোর্ডে তা টাঙ্গিয়ে দিতে হবে। একই সঙ্গে মোবাইলফোনের মাধ্যমে সবাইকে অবহিত করতে হবে। নির্দেশনায় বলা হয়, সম্পূর্ণ নৈর্ব্যক্তিকভাবে মামলার যে কোনো আদেশ দিতে হবে। মনে রাখতে হবে কোনো ভূ আদেশের ফলে বিশৃঙ্খলা, দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলার উদ্ভব, সামাজিক অসন্তোষ এবং দপ্তরের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার মতো নেতিবাচক পরিস্থিতির যেন সৃষ্টি না হয়। ভূমি অফিসে ডিজিটাল প্রযুক্তি চালু করার ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া ই-নামজারি সিস্টেম পর্যায়ক্রমে চালু করতে হবে। উমেদার প্রথা রহিত করার ব্যবস্থা নিতে হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনায় এগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করার অনুরোধ করা হয়েছে। মানব জমিন

পাঠকের মতামত

‘বাংলাদেশ-মিয়ানমার রাজি থাকা সত্ত্বেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হওয়ার কারণ খুঁজতে হবে’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ...